আত্মখুঁতান্বেষী || ইফতেখার মাহমুদ

আত্মখুঁতান্বেষী || ইফতেখার মাহমুদ

হুমায়ূন আহমেদ সম্ভবত বাংলাসাহিত্যের একমাত্র লেখক যিনি নিজের অসংখ্য খুঁতের কথা নিজেই লিখে গেছেন। তার সম্পর্কে যতগুলো নিন্দা আছে, তার অধিকাংশেরই প্রচারকর্তা (যদি রচয়িতা বলতে আপত্তি থাকে) তিনি নিজে। নাটক লিখে টিভি কেনার টাকার জোগাড় করা থেকে শুরু করে আহমদ ছফা তাকে যে হালকা বাজারি-লেখক বলছেন, ইত্যাদি কথাবার্তা তিনি নিজেই যত্ন করে লিখে বই বাঁধিয়ে পাঠকের হাতে তুলে দিতেন।

প্রশ্ন হলো, কেন দিতেন?

আমার কাছে উত্তর একটাই।

নিজেকে বলে-যাওয়া ছাড়া তার হাতে অন্য কোনো কাজ ছিল না। অন্তত শিল্পী হিসেবে এই জায়গায় তার অবস্থান এ-রকমই। আড়াল করার জন্য বাছাবাছি বেশি করলে লিখতে গিয়ে তাকে বিপদে পড়তে হতো। নিজেকে অবারিত রাখার খাতিরে তিনি অত অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করতেন না।

একবার এক সাক্ষাৎকারে কাকে ভোট দিয়েছেন, দলীয় প্রধানের নাম উল্লেখ করে এই প্রশ্নেরও তিনি উত্তর দিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি সোজাভাবে বাঁকাভাবে সবভাবে নিজেকে লিখে গিয়েছেন।

প্রকাশকের চাহিদা ছিল, সম্পাদকেরা অনবরত তাগাদা দিত, পাঠক হাত পেতে বসে থাকত, তার সাথে নিজের আগলভাঙা কণ্ঠস্বর, সব মিলিয়ে তাই বেহিসেবির মতো লিখে যেতে পেরেছেন।

লেখালেখির ব্যাপারে তিনি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্বভাবসততা ধরে রাখতে পেরেছিলেন বললে হয়তো ভুল হবে না।

… …

COMMENTS

error: